Mon, Sep 8, 2025

সোহিনী আলম প্রসঙ্গে

সোহিনী আলম প্রসঙ্গে
  • PublishedApril 10, 2013

“ক্ষ” ব্যান্ডের মূল ভোকাল Sohini Alam এর গানের সাথে আমার প্রথম পরিচয় ২০০৮ সালে এক কনসার্টে লন্ডনের স্কুল অফ ইকোনোমিক্সের এক অডিটোরিয়ামে।। দৃষ্টিপাতের সেই কনসার্টের আরেকজন আকর্ষন ছিলেন অর্ণব। সোহিনী তখনো আমার কাছে অপরিচিত। সাধারণত অপরিচিতের গান আমরা ওইভাবে মন দিয়ে শুনি না। কিন্তু স্টেজে উঠে খুব সম্ভবত তিনি দুটি গান গাইলেন, দর্শক হাঁ করে ভদ্রমহিলার গান শুনলেন এবং তিনি নেমে যাবার অনেক্ষণ পর পর্যন্ত দর্শক তাদের দু হাত দিয়ে তালি দিয়ে যেতেই লাগলো কি দেশী সংগীতপ্রেমী কি বিদেশী শ্রোতা, সকলেই। আমার জীবনে খুব ধারালো কন্ঠ বলতে যে কয়েকজনের গলা শুনেছি বা নাম বলব, তাদের মধ্যে সোহিনী অন্যতম।

এই “ক্ষ” ব্যান্ড গত ডিসেম্বরে (২০১২) আমাদের জাতীয় সংগীতের একটা মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করে। জাতীয় সংগীত শুনলে এমনিই আমার অন্য রকম একটা অনুভূতি হয়। কিন্তু “ক্ষ” ব্যান্ডের নিজেদের কম্পোজিশনে করা গানটিতে আমার কোনো অনুভূতি হয়নি। অনভূতি শূন্য হয়ে গিয়েছিলাম। যতদূর মনে পড়ে আমি সারাদিনে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ বারের মত এই ট্র্যাকটা শুনেছি। আমাকে না জিজ্ঞেস করেই একুয়াস হিউমার প্রান্তর ভেসে গিয়েছে বার বার।

গতকাল বাংলা নিউজের একটা লেখায় জানতে পারলাম শিল্পী মিতা হক, খায়রুল আনাম শাকিল, সাদী মহম্মদ ফতোয়া দিয়েছেন যে “ক্ষ” ব্যান্ড যেভাবে গেয়েছেন সেটি রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল। “ক্ষ” ব্যান্ড ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। আমি বুড়োপোকাদের এসব কথা-বার্তাতে খুব একটা আশাহত হই না। যে বালক বা বালিকা স্কুলে বিনা সুরে, বিনা লয়ে চোখ বন্ধ করে জাতীয় সংগীত গায় আর চোখের পানি ঝরায়, এইসব বুড়োপোকাদের কাছে সেই চোখের অশ্রুর থেকে, সেই ভালোবাসা থেকেও হয়ত বড় হয়ে দাঁড়াবে ওই বালক বালিকা কেন বিনা সুরে কিংবা তাদের এবং একমাত্র তাদের নির্দেশনামত জাতীয় সংগীত গাইলো না। চোখের অশ্রু, ভালোবাসা, ভালোলাগার সামনে নিয়ম, কানুন, ট্র্যাডিশন, ঐতিহ্য এসব বরাবরি বড় হয়ে যায়। এ আর নতুন কি।

তবে মিতা-শাকিল আর সাদী ভাইদের অনুরোধ করি রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা টামলা দিলে সোহিনী বা “ক্ষ” ব্যান্ডের সাথে আমারে রাইখেন আসামী হিসেবে। কেননা ওদের গানটিকে, ওদের সুরকে বড় বেশী ভালোবেসে ফেলেছি। অপরাধীকে উৎসাহ দেয়াটাও একধরনের অপরাধ বটে। সে হিসেবে শাস্তি আমারও পাওনা।

ভালোবেসে না হয় রাষ্ট্রদ্রোহী-ই হলাম। কি আছে জীবনে রে পাগলা…