নবীদের কুৎসিত যৌনতা ও ধর্ম

একটা হামাগুড়ি দেয়া শিশুকে দেখে প্রফেট মুহাম্মদ বললেন, ‘যদি সে বড় হয় এবং আমি তখনও বেঁচে থাকি, আমি তাকে বিয়ে করব…’। দেশে তিন-চার বছর বয়েসের শিশুদের ধর্ষণ করে হত্যা করা হচ্ছে। এই নিউজগুলো সহজভাবে নেয়ার মত ক্ষমতা আমার নেই। আমার ছোট্ট মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে আমি বিপন্নবোধ করি, এ কোন পৃথিবীতে তাকে আমি নিয়ে এসেছি! সত্যি বলতে কি এই প্রসঙ্গে লেখার মত মনের জোরও পাই না। ধর্ষকদের ধরে ধরে লিঙ্গ কেটে দেয়ার সমাধান নিয়ে অন্যরা সোচ্চার হলেও আমি ধর্ষক, শিশুকামিদের মনস্তাত্বিক দিকটি নিয়ে ভাবতে বেশি আগ্রহী। একটা খুনিরও লজিক থাকে। লোকটা তো একদিন মারা যেতোই, কিংবা লোকটা সমাজের জন্য ক্ষতিকার ছিল তাই তাকে শেষ করে দেয়াটা খারাপ হয়নি- এইরকম লজিক। আমি চিন্তা করি (বলতে পারেন আমার স্বভাব দোষ) একটা নিতান্তই শিশু, যার শরীরের বিন্দু পরিমাণ নারীত্বের চিহৃ ফুটে উঠেনি- তাকে দেখে কাম জাগ্রত হওয়া জানোয়ারদের মনস্তাত্বিক প্রেরণাটা কোথায়? কিংবা শিশুকে সেক্সের উপযোগী চিন্তা করতে সমাজে কোন বিশ্বাস বা নৈতিকতার উৎস কি এখানে পরোক্ষ ভূমিকা রাখছে?

এদেশের প্রধান ধর্ম ইসলাম। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মানসিকতা গড়তে এখানে ইসলাম যে একটা ভূমিকা রাখছে তাতো অস্বীকার করা যাবে না। জেনে অবাক হতে পারেন যে, ইসলামে নারীদের বিয়ের বয়স নির্ধারিত করা হয়নি। অর্থ্যাৎ জন্মের পরই তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া সম্ভব। এবং এই বিয়ে পরিণত বয়েসে এসে তাকে মেনে নিতে হবে। শৈশবে চুক্তিকৃত কোন্‌ প্রকারের বিবাহ বয়ঃপ্রাপ্তির পর অবশ্যই পালনীয় (দ্য হেদাইয়া কমেন্টারি অন দ্য ইসলামিক ল’স)।

ইন্টারনেটে এক মাওলানাকে বললাম, এই যে তিন-চার বছরের শিশুদের ধরে ধরে ধর্ষণ করা হচ্ছে, এখানে তো পর্দা বা পোশাকের ব্যাপার নেই- কেন এরকম হচ্ছে? ধর্মীয় বিধানই কি এই বিষয়ে? হুজুর বললেন, মেয়ে বাচ্চা শিশু হলেও সে ছেলে সন্তান নয়। এ জন্য তাকে ঘরে হেফাজত করে রাখতে হবে। যেহেতু তিন-চার বছর বয়েসেই ধর্ষণের শিকার হচ্ছে, তাই বাবা-মাকে এখন থেকেই তাদেরকে ঘরের ভেতর নিজ দায়িত্বে হেফাজত রাখতে হবে…। আমার মনে পড়ে গেলো ইবনে ইসহাকের সীরাতুন্নবী’র একটা ঘটনা। ইবনে ইসহাক বর্ণনা করেছেন, নবী তাকে (উম্ আল-ফজলকে) দেখেন যখন সে তার সামনে হামাগুড়ি দিচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘যদি সে বড় হয় এবং আমি তখনও বেঁচে থাকি, আমি তাকে বিয়ে করব’। কিন্তু সে বড় হওয়ার আগেই নবী ইন্তেকাল করেন এবং সুফিয়ান বিন আল-আসওয়াদ বিন আব্দুল আসাদ আল-মাখজুমির সাথে তার বিয়ে হয় এবং সুফিয়ানের ঔরসে তার রিজক ও লুবাবা নাম্নী দু’টি সন্তান জন্মে (ইবনে ইসহাকের সিরাত, সিরাতুননবী)।

এই ভারতবর্ষের ‘গৌরীদান’ নামের সনাতন হিন্দু ধর্মের আচার ছিল অষ্টমবর্ষীয়া কন্যাকে বিবাহ সম্প্রদান করা। দুর্গা ঠাকুর এই বয়েসেই শিবের ঘর করতে গিয়েছিলেন। সে যুগে বাঙালী হিন্দু ঘরে ছয়-সাত বছর বয়েসেই তাই মেয়েদের বিয়ে দেয়া হতো। কন্যাশিশুর প্রতি সামাজিক এই অনাচারে যদি হিন্দু ধর্মকে আমরা দায়ী করি (অবশ্যই দায়ী ছিল) তাহলে এবার নিশ্চয় আপনি স্বীকার করবেন মুসলিম নারীদের অপ্রাপ্ত বয়স্ক বিয়ের জন্য এই হাদিসটির প্রভাব আছে। হিশামের পিতা হতে বর্ণিত, নবী মদীনা চলে যাওয়ার তিন বছর পুর্বে খাদিজা ইন্তেকাল করেন। সেখানে বছর দুই কাটানোর পর তিনি আয়েশাকে বিয়ে করেন, আয়েশা তখন ছয় বছরের বালিকা মাত্র, এবং আয়েশার বয়স যখন নয় বছর তখন তিনি বিয়েকে পূর্ণাঙ্গ করেন (সহি বুখারিঃ ভলিউম-৫, বুক নং-৫৮, হাদিস নং-২৩৬ঃ)।

দেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বাতিল করতে ইসলামিস্টরা দীর্ঘদিন ধরে দাবী করে আসছিল। হযরত উমার চার বছর বয়েসের এক শিশুকে বিয়ে করেছিলেন। এই মহান ধর্মীয় ব্যক্তিরা কোন শিশুকে কোলে তুলে নিয়ে স্বাভাবিক চুমু খেতেও বোধহয় যৌন অস্বস্তিতে পড়তেন? বাড্ডায় যে শিশুটিকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছিলো সেই খুনি-ধর্ষকটি একটি শিশুকে যৌন উপযোগী ভাবতে এইসব ব্যক্তিবর্গ আর তাদের বিধান থেকে কতখানি মনস্তাত্বিক বিকৃতি লাভ করেছিলো জানি না। সেই বিতর্ক না হয় মুলতবিই রাখলাম। তবে ধর্মে যে শিশু নিপীড়ণের কোন সমাধান নেই- সেটি বলতে তো আর দ্বিধা নেই। ‘ধর্মের নৈতিক শিক্ষা’ একটি কন্যা শিশুকেও স্রেফ সেক্সডলই করে তুলেছে!

Exit mobile version