বকধার্মিক

মাঝে মধ্যে আমি অনেক ব্যাপারে জামাতের দোষ দিতে পারিনা সবার আগে। যদিও আমাদের জাতীয় জীবনের প্রত্যেটি ব্যাপার এরা ট্যাকেল করতে চায় ধর্মকে ব্যাবহার করে। কিভাবে? যেমন ধরেন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসলে মসজিদে উলু ধ্বনি হবে, দেশ বিক্রি হয়ে যাবে, আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল হচ্ছে রাজনৈতিক প্রহসন, এটা আওয়ামী ট্রাইবুনাল, শাহবাগের আন্দোলন হচ্ছে নাস্তিক-মুরতাদের আড্ডাখানা।

এত কিছু বলার পর, এত প্রোপাগান্ডার পর কেন আমি সবার আগে জামাতের দোষ দেইনা?

কারনটা খুব সোজা। কাদের উদ্দেশ্যে ওরা এই প্রোপাগান্ডা গুলো প্রচার করে? বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যেই নিশ্চয়? এবং এই সব প্রোপগান্ডায় শেষ পর্যন্ত কে বিশ্বাস করে? আমরা বাংলাদেশীরাই তো, নাকি ভিনগ্রহের কেউ?

ইয়েস, এই প্রোপাগান্ডাগুলোতে শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস আনে আমাদেরই কিছু ভাই, বন্ধু, আত্নীয় স্বজন। এই ভাই-বন্ধুরা আবার অশিক্ষিত হলে নিজেকে সান্তনা দিতাম। বলতাম, আচ্ছা থাক বেচারার পড়ালেখা নেই, তাই ধর্ম দিয়ে একে ভোলানো হয়েছে। কিন্তু আদতে ব্যাপারটা তা না। আমার এইসব বন্ধু বান্ধব, আত্নীয় স্বজন একেকজন বিরাট ডীগ্রি ওয়ালা বিদ্বান, দেশের নামী-দামী বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা দেশের বাইরে নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিংবা পড়ালেখা শেষ করে চাকরী করছে, ব্যাবসা করছে। জামাতের প্রোপাগান্ডায় মূলত এরাই নাচে। আফসোস টা আসলে তখনই লাগে। অথচ এরা কিন্তু আবার সবাই জানে যে জামাত আমাদের শত্রু। এরা সবাই জানে স্বাধীনতাবিরোধীরা শাহবাগের গণসমূদ্র পন্ড করবার জন্য মুখিয়ে আছে।

একটা শিক্ষিত, মার্জিত, ছেলে যখন নিজের বাছ বিচার করবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এইসব অপঃপ্রচারে বিশ্বাস আনে, আবার সেই ছেলেটিই (কিংবা মেয়েটি) যখন শাহবাগ থেকে স্লোগান দিয়ে আসে “আমি কে? তুমি কে? বাঙালী…বাঙালী” তখন কষ্টের পরিমান আরো বেড়ে যায়।

স্লোগানে স্লোগানে নিজেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় কাঁপিয়ে তুলে ঘরে এসে সেই বাঙালী টিপিকাল বকধার্মিক হবার মত গ্লানি আর নেই বোধকরি…

একদিন আপনারা সবাই বুঝতে পারেন জামাতের এসব চাল। যখন বোঝেন, তখন আর ফেরার পথ থাকেনা।

Exit mobile version